অহিদুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ
নওগাঁর নিয়ামতপুর উপজেলার বীরজয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মোঃ কামরুজ্জামান ও সরকারি শিক্ষক মোঃ বাবুল আকতার জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদে চাকরি করছেন। স্থানীয় এক ব্যাক্তির অভিযোগের ভিত্তিতে তাদের সনদ যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করেন জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ শাহাদাৎ হোসেন। যাচাই অন্তে তাদের শিক্ষক নিবন্ধন সনদ জাল বলে সম্প্রতি প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে এনটিআরসিএ।
এনটিআরসিএ এর সহকারী পরিচালক সাইফুল ইসলাম স্বাক্ষরিত প্রতিবেদনে জানা যায়, ২০০৬ সালের ২য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ১১২২০০৫৪ রোল নম্বর সম্বলিত মোঃ বাবুল আকতার চৌধুরী, পিতা মোঃ আব্দুস সালাম চৌধুরী এর দাখিলকৃত প্রত্যয়ন পত্রটির সাথে এ প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত ফলাফলের মিল নাই। সংগত কারণে প্রতীয়মান হয় প্রত্যয়ন পত্রটি সঠিক নয়। দাখিলকৃত প্রত্যয়ন পত্রটি জাল ও ভুয়া।
অপর দিকে, ২০০৬ সালের ২য় শিক্ষক নিবন্ধন পরীক্ষার ৪২৬১৩২৭ রোল নম্বর সম্বলিত মো. কামরুজ্জামান মন্ডল, পিতা মোঃ আমির উদ্দিন মন্ডল এর দাখিলকৃত প্রত্যয়ন পত্রটির সাথে এ প্রতিষ্ঠানে সংরক্ষিত ফলাফলের মিল নাই। সংগত কারণে প্রতীয়মান হয়। প্রত্যয়নপত্রটি সঠিক নয়। দাখিলকৃত প্রত্যয়নপত্রটি জাল ও ভুয়া।
প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, উপরোক্ত প্রত্যয়ন পত্রধারী ব্যক্তিদের রেকর্ড পত্র দৃষ্টে জাল জালিয়াতির আশ্রয় নিয়েছেন মর্মে প্রতীয়মান হয়েছে। উক্ত জাল ও ভুয়া প্রত্যয়ন পত্রধারী ব্যক্তিদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের লক্ষ্যে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি সংযুক্ত ছক মোতাবেক এনটিআরসিএ কার্যালয়ে প্রেরণের জন্য নির্দেশক্রমে অনুরোধ করা হলো।
জানা যায়, বীরজোয়ান উচ্চ বিদ্যালয়ের জীব বিজ্ঞান বিষয়ের শিক্ষক মোঃ কামরুজ্জামান মন্ডল ২০০৬ খ্রিস্টাব্দের পাশ করা জাল শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ২০০৮ খ্রিস্টাব্দে ৩০ এপ্রিল ২০০৮ খ্রিস্টাব্দের ৫ মে যোগদান করে এখন পর্যন্ত চাকরি করছেন এবং তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি বিষয়ের শিক্ষক মোঃ বাবুল আকতার একই খ্রিস্টাব্দের জাল একটি শিক্ষক নিবন্ধন সনদ দিয়ে ২০১১ খ্রিস্টাব্দের ৪ ডিসেম্বর নিয়োগ নিয়ে ওই মাসের ৫ তারিখে যোগদান করে এখন পর্যন্ত চাকুরী করছেন। ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক জোনাব আলীর প্রত্যক্ষ সহযোগিতায় এখন পর্যন্ত তারা সরকারি কোষাগার থেকে লক্ষ লক্ষ টাকা বেতন-ভাতা উত্তোলন করে আত্মসাৎ করে যাচ্ছেন বলে জানা যায়।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে এবং ওই দুই শিক্ষকের তথ্য চাইলে বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক মোঃ জোনাব আলী বলেন, তাদের কোন তথ্য আমি আপনাকে দিবো না। উপজেলা শিক্ষা অফিসে দেওয়া আছে সেখান থেকে নিয়ে নেন।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জেলা শিক্ষা কর্মকর্তা শাহাদাৎ হোসেন বলেন, অভিযোগ পাওয়ার পর উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তা ওই দুই শিক্ষকের শিক্ষক নিবন্ধন সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য প্রেরণ করেছিলেন। পরবর্তীতে তাদের সনদপত্র যাচাইয়ের জন্য এনটিআরসিএ’তে প্রেরণ করা হয়েছিল। সেখানে তাদের সনদ জাল বলে প্রমাণিত হয়েছে বলে আমি জেনেছি তবে এখন পর্যন্ত কোন চিঠি হাতে পাইনি। চিঠি পেলে নির্দেশনা মতো কাজ করা হবে।