বুধবার, ২১ মে ২০২৫, ১২:৫৩ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম
শিরোনাম
নওগাঁয় ধর্ষণ মামলা থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারো জোরপূর্বকভাবে ঘরে তুললেন ছাত্রী দোলাকে নওগাঁর বদলগাছীতে দেরিতে স্কুলে আসায় শিক্ষককে শোকজ সুনামগঞ্জ সীমান্তে পাহাড়ি ঢল, কয়লা কুড়াতে শ্রমজীবী মানুষের হিড়িক। অভয়নগরে শাকিল নামের এক যুবকের ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার আমতলীতে ২৬ মন সামুদ্রিক মাছ পাচারকালে জব্দ, নিলামে বিক্রি! দোয়ারাবাজারে দোহালিয়া ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান, আওয়ামী লীগ নেতা “আনু” গ্রেফতার জেলা বিএনপির সভাপতির বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ও ছাত্রদল অফিস ভাংচুরের প্রতিবাদে কালিয়ায় সংবাদ সম্মেলন সরকারি আইন অমান্য করে, সেচ দপ্তরের যায়গায় বেআইনি নির্মাণ কাজ চলছে মগরাহাট পশ্চিমে। বাংলাদেশ প্রেস কাউন্সিলে প্রশিক্ষণ শেষে সনদ পেলেন সাংবাদিক কামাল হোসেন বগুড়ার শিবগঞ্জে ভ্রাম্যমানে দু’টি ক্লিনিকের ১ লক্ষ ১৫ হাজার জরিমানা

নওগাঁয় ধর্ষণ মামলা থেকে জামিনে বেরিয়ে আবারো জোরপূর্বকভাবে ঘরে তুললেন ছাত্রী দোলাকে

অহিদুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা প্রতিনিধিঃ / ১২ বার পঠিত
আপডেট : মঙ্গলবার, ২০ মে, ২০২৫, ৭:১১ অপরাহ্ণ

নওগাঁর মান্দায় ধর্ষণ মামলায় গ্রেপ্তারের পর জামিনে বেরিয়ে আবারো জোরপূর্বকভাবে ছাত্রী দোলাকে ঘরে তুললেন সেই ভাইরাল শিক্ষক আকরাম মন্ডল। আজ মঙ্গলবার দুপুরে এ ঘটনা ঘটে। এঘটনার পর থেকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ব্যাপক- আলোচনা ও সমালোচনার ঝড় বইছে।

এর আগে বাল্যবিবাহ করার অপরাধ থেকে নিজেকে বাঁচাতে সাড়ে ১৬ বছর বয়সী নিজ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী দোলাকে বিয়ে করার পর অস্বীকার করেন মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আকরাম মন্ডল। ওই ঘটনায় গত ৩০ এপ্রিল (বুধবার) বিকেলে মান্দা থানায় একটি ধর্ষণের মামলা দায়ের করেন ভুক্তভোগী ছাত্রীর বাবা। মামলায় প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের প্রথম স্ত্রী স্বপ্না খাতুনকেও আসামি করা হয়েছে। সে মামলায় র‌্যাব ও মান্দা থানা পুলিশের যৌথ অভিযানে গত (১মে) বৃহস্পতিবার বিকেলে নাটোরের বনপাড়ার তার এক আত্মীয়ের বাড়ি থেকে তাকে আটক করা হয়।

আটককৃত প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন উপজেলার ৮ নং কুসুম্বা ইউনিয়নের হাজীগোবিন্দপুর ফকিরপাড়া গ্রামের সাবেক মুক্তিযোদ্ধা কমান্ডার আফসার আলী মন্ডলের ছেলে।

জানা যায়, বিয়ের প্রলোভনে তার বাড়িতে রেখে ধর্ষণ করেছে বলে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী দোলার বাবা বাদী হয়ে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের বিরুদ্ধে থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর থেকে আকরাম হোসেন পলাতক ছিল। তারপর মান্দা থানা পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে তাকে আটক করা হয়েছিল।

স্থানীয় বাসিন্দা ময়েজ উদ্দিন বলেন, গত ২৬ মার্চ (বুধবার) মুক্তিযোদ্ধা বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থীকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন। বিষয়টি জানাজানি হলে শিক্ষার্থী অভিভাবকসহ এলাকার লোকজন ফুঁসে উঠেন। এ ঘটনার পর প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের অপসারণসহ শাস্তির দাবিতে মানববন্ধনসহ বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করা হয়। একই দাবিতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ব্যাপক ভাইরাল হন প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন।

কুসুম্বা গ্রামের বাসিন্দা সিদ্দিকুর রহমান বলেন, প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেনের এসব কুকীর্তির ঘটনায় এলাকাবাসি মান্দা ইউএনও বরাবর অভিযোগ করেন। ঘটনার তদন্তে ৫ সদস্যের কমিটি গঠন করা হয়। গত ২৯ এপ্রিল বিকেলে উপজেলা পরিষদের হলরুমে এ তদন্ত অনুষ্ঠিত হয়। তদন্তে প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন ওই ছাত্রীকে বিয়ে করার কথা অস্বীকার করেন। এ সংবাদ প্রকাশ হয়ে পড়লে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর পরিবারসহ এলাকাবাসি বিক্ষুব্ধ হয়ে উঠেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর বাবা এমদাদুল বলেন, আমি অশিক্ষিত মানুষ। আমাদের এলাকার মুনসুর কাজীর সহযোগী আলম এসে বিয়ে রেজিষ্ট্রি করে। আমাকে যেখানে স্বাক্ষর দিতে বলছিলো সেখানে আমি স্বাক্ষর দিয়েছিলাম। এরপর আমি কয়েকবার তার কাছে গিয়ে বিয়ের নকল চাইলে বিভিন্নভাবে তালবাহানা করে আমাকে নকল দেননি। এরমধ্যে স্থানীয়দের করা অভিযোগের জন্য গতকাল আমাকে ডাকলে বিভিন্নভাবে ভয়ভীতি দেখিয়ে তদন্ত কর্মকর্তাদের কাছে আমার মেয়েকে বিয়ে দিইনি বলতে বাধ্য করে। আমার মেয়েকে যদি বিয়ে না করে তাহলে সে তাকে ধর্ষণ করেছে। সেজন্য আমি তার বিরুদ্ধে ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছি। এরপর জামিনে বেরিয়ে এসে আমার বাড়ি থেকে আমার মেয়েকে জোড়পূর্বকভাবে অপহরণ করে তুলে নিয়ে যায় আকরাম মাষ্টার এবং তার ক্যাডার বাহিনীরা। আমি এর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।

মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে মান্দা থানার অফিসার ইনচার্জ মনসুর রহমান বলেন, মামলার পর থেকে সে পলাতক ছিল। তথ্য প্রযুক্তির মাধ্যমে তার অবস্থান নিশ্চিত হয়ে থানা পুলিশ ও র‌্যাবের যৌথ অভিযানে নাটোরের বনপাড়া থেকে তাকে আটক করা হয়েছিল।

এবিষয়ে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক আকরাম মন্ডলের মুঠোফোনে একাধিকবার কল দিলেও সেটি বন্ধ থাকায় তার বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।

উল্লেখ্য, মুক্তিযোদ্ধা মেমোরিয়াল বালিকা বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী এক শিক্ষার্থীকে বিয়ে করে তৃতীয় স্ত্রী হিসেবে ঘরে তোলেন প্রধান শিক্ষক আকরাম হোসেন। এ ঘটনার পর তার দ্বিতীয় স্ত্রী রীনা আক্তার পুতুল দুসন্তান নিয়ে স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবা বাড়ি চলে যান।

Facebook Comments Box


এই ক্যাটাগরির আরও খবর
এক ক্লিকে বিভাগের খবর